এইচএসসি প্রস্তুতি পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র | HSC Civics
এইচএসসি প্রস্তুতি পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র | HSC Civics
নিচের উদ্দীপকটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব ফারুক নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বঙ্গভঙ্গ হওয়ার পেছনেও তাঁর অবদান ছিল অনেক বেশি। তিনি মুসলমানদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন এবং একটি রাজনৈতিক দলও গঠন করেন।
ক. বেঙ্গল প্যাক্ট কত সালে সম্পাদিত হয়?
খ. নওয়াব আবদুল লতিফকে বাংলার সৈয়দ আহমদ বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যক্তির সঙ্গে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মিল পাওয়া যায়? আলোচনা করো।
ঘ. উল্লিখিত কর্মকাণ্ড ছাড়া ওই ব্যক্তিত্ব শিক্ষা ক্ষেত্রে কী কী অবদান রাখেন? বিশ্লেষণ করো।
উত্তর :
ক. ১৯২৩ সালে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ সম্পাদিত হয়।
খ.নওয়াব আবদুল লতিফকে বাংলার সৈয়দ আহমদ বলা হয়।
মুসলমান সমাজের দুঃখ-দুর্দশা ও দুর্গতি দূর করার জন্য স্যার সৈয়দ আহমদ মুসলমানদের উন্নতির লক্ষ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের ওপর জোর দেন।
বাংলার মুসলমানদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে নওয়াব আবদুল লতিফ অনুরূপ ভাবনা ভেবেছিলেন। স্যার সৈয়দ আহমদের মতো তিনিও মুসলমানদের উন্নয়নে সমাজ সংস্কারমূলক ও শিক্ষা বিস্তারমূলক কাজ করেন। এসব কারণে নওয়াব আবদুল লতিফকে বাংলার সৈয়দ আহমদ বলা হয়।
গ. জনাব ফারুকের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নবাব স্যার সলিমুল্লাহর মিল পাওয়া যায়।
মুসলমানদের উপেক্ষিত অবস্থা থেকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করার জন্য যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ অন্যতম। তৎকালীন সময়ের অনগ্রসর মুসলমান সম্প্রদায়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে অংশ নেন।
মুসলমান সম্প্রদায়ের সঙ্গে সরকার ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সুসম্পর্ক তৈরিতেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার্থে তিনি প্রথমে গঠন করেন মোহামেডান প্রভিন্সিয়াল ইউনিয়ন এবং পরে তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়া মুসলমান সমাজের শিক্ষার অগ্রগতিতে তিনি বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করার মাধ্যমে ভূমিকা রাখেন।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কর্মকাণ্ড ছাড়াও পাঠ্য বইয়ের নবাব স্যার সলিমুল্লাহর আরো বহুবিধ অবদান রয়েছে।
১. আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল প্রতিষ্ঠা : নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নিজ উদ্যোগে পুরান ঢাকায় আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়।
২.মিটফোর্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা : নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় সহযোগিতা প্রদান করেছিলেন।
৩.ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় নবাব স্যার সলিমুল্লাহর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলে তিনি ভীষণভাবে মর্মাহত হন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে এবং পূর্ব বাংলার মুসলমান জনগণকে সন্তুষ্ট করার জন্য ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে।
৪।সলিমুল্লাহ মুসলিম হল প্রতিষ্ঠা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে মুসলমান ছাত্রদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য একটি হল নির্মাণ করা হয়। নবাব সলিমুল্লাহর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্যই এই ছাত্রাবাসটির নামকরণ করা হয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।
৫।সলিমুল্লাহ এতিমখানা প্রতিষ্ঠা : পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম দরদ ছিল। এ দেশের দুঃখী মানুষের জন্য তিনি একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
COMMENTS