শুদ্ধ বানান গুরুত্বপূ্র্ণ নিয়ম | বাংলা বানানের নিয়ম
শুদ্ধ বানান শিখুন
শুদ্ধ বানান গুরুত্বপূ্র্ণ নিয়ম | বাংলা বানানের নিয়ম
১. ‘কে’ এবং ‘-কে’ এর ব্যবহার: প্রশ্নবোধক অর্থে ‘কে’ (ইংরেজিতে Who অর্থে ব্যবহৃত হয়)যেমন—সালাম কে ?এখানে প্রশ্ন করা বুঝিয়েছে কিন্তু যদি প্রশ্ন করা বোঝায় না অর্থে প্রয়োগ ঘটাতে চাই তাহলে ‘-কে’শব্দটিকে এক সাথে ব্যবহার করতে হবে। যেমন— সালামকে আসতে বলো।রহিমকে যেতে বল।কিন্তু যদি আমরা এভাবে লিখতাম"রহিম কে যেতে বল"তাহলে এটি ভুল হত কারণ এখানে রহিম শব্দের পরে কে শব্দটি যুক্ত হয়েছে যা এক সাথে উচ্চারণ হবার কথা ছিল।
কোথায় কে একসাথে বসবে কোথায় বসবেনা এ নিয়ে নেক্সট সময়ে একটা বিস্তর পোস্ট পাবেন।
'
২. দূরত্ব বোঝায় না এরূপ শব্দে উ-কার ব্যবহার করে শব্দ গঠন করতে হয়।'উ' কার যোগে ‘দুর’ (‘দুর’ মূলত একটি উপসর্গ) বা ‘দু+রেফ’ হবে। যেমন— দুরাত্মা, দুরারোহ, দুরারোগ্য, দুর্মূল্য, দুরবস্থা, দুঃসাধ্য, দুরন্ত, দুরাকাঙ্ক্ষা,দুকথা, দুরারোগ্য, দুরূহ, দুর্গা, দুর্গতি, দুর্গ, দুর্গেশনন্দিনী, দুর্দান্ত, দুর্নীতি, দুর্যোগ, দুর্ঘটনা, দুর্নাম, দুজায়গা, দুর্ভোগ, দুর্দিন, দুর্বল, দুর্জয় ইত্যাদি।
৩. দূরত্ব বোঝায় এমন শব্দে ঊ-কার ব্যবহার করে শব্দ গঠন করতে হয়। যেমন—দূর, দূরবর্তী, দূর-দূরান্ত, দূরীকরণ, অদূর, দূরত্ব, দূরবীক্ষণ ইত্যাদি।দূরত্ব বোঝানো ছাড়াও এর আরো প্রয়োগগত ভিন্নতা আছে নেক্সট সময় বিস্তর পোস্ট আসবে।
৪.'ন'ও 'ণ' এর ব্যবহার:
প্রায় সময় দেখা যায় এই 'ন' ও 'ণ' এর ব্যবহারে অনেকেই ভুল করে থাকেন।
কোন শব্দ লিখতে গিয়ে সব সময় মনে রাখবেন 'র' এর পরে 'ণ' ব্যবহৃত হবে।আর 'ড়'এর পরে 'ন' ব্যবহার হবে।যেমন- কারণ,বারণ,ধারণ,ছাড়ন, নাড়ান, বাড়ান ইত্যাদি। 'ন' ও 'ণ' এর আরো বিশদ আলোচনা ও প্রয়োগ আছে। যেমন-" ে " কার "া" কার "ো" কার,"ু" কার,"ূ" কার যোগে গঠিত শব্দের "র" ও "ড়" এর পরে ন ও ণ এর ব্যবহার কিরূপ হবে? তা নেক্সট সময়ে পোস্ট আসবে
৫. ‘স্ট’ এবং ‘ষ্ট’ ব্যবহার: বিদেশি শব্দে ‘স্ট’ ব্যবহার হবে। বিশেষ করে ইংরেজি st যোগে শব্দগুলোতে ‘স্ট’ ব্যবহার হবে। যেমন— বাস্টার্ড, কাস্টার্ড,পোস্ট, স্টার, স্টাফ, স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, স্ট্যাটাস, মাস্টার, ডাস্টার, পোস্টার, স্টুডিও, ফাস্ট, লাস্ট, বেস্ট ইত্যাদি। ষত্ব-বিধান অনুযায়ী বাংলা বানানে ট-বর্গীয় বর্ণে ‘ষ্ট’ ব্যবহার হবে। যেমন— বৃষ্টি, কৃষ্টি, সৃষ্টি, দৃষ্টি, মিষ্টি, নষ্ট, কষ্ট, তুষ্ট, সন্তুষ্ট ইত্যাদি।
'
৬. পদের শেষে ‘-জীবী’ দুটো ঈ-কার যোগ করতে হয় যেমন— শ্রমজীবী, চাকরিজীবী,আইনজীবী,পেশাজীবী, কৃষিজীবী, ইত্যাদি।
৭. পদের শেষে ‘-বলি’ (আবলি) ই-কার যোগ করে শব্দ গঠন করতে হয়। যেমন—নিয়মাবলি,কার্যাবলি, শর্তাবলি, ব্যাখ্যাবলি,তথ্যাবলি ইত্যাদি।অনেকেই শেষে "ী"কার বসান যেটা ভুল।
৮. ‘পূর্ণ’ এবং ‘পুন’ (পুনঃ/পুন+রেফ/পুনরায়) এর সঠিক ব্যবহারে অনেকেই ভুল করে থাকি।একটু খেয়াল রাখলে ভুল হবার হার অনেকাংশে কমে যাবে। ‘পূর্ণ’ (ইংরেজিতে Full/Complete অর্থে)যার অর্থ শেষ হয়ে যাওয়া বুঝায় যেখানে আর কোন কিছু অবশিষ্ট থাকেনা এমন শব্দ গঠনের সময় পূর্ণ শব্দ যোগে বানান লিখতে হয় পূর্ন নয়। শব্দটিতে ঊ-কার এবং র্ণ যোগে ব্যবহার হবে। যেমন—পূর্ণপক্ব, পূর্ণরূপ, পূর্ণমান, সম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ ইত্যাদি।
আবার ‘পুন’ (পুনঃ/পুন+রেফ/পুনরায়— ইংরেজিতে Re- অর্থে)যদি পুনরায় কোন কিছু করার প্রয়োজন বা দরকার হয় তাহলে পুন যোগে শব্দ গঠিত করতে হয়।এমন শব্দটিতে উ-কার হবে এবং অন্য শব্দটির সাথে যুক্ত হয়ে ব্যবহার হবে। যেমন— পুনঃপ্রকাশ, পুনঃপরীক্ষা, পুনঃপ্রবেশ, পুনঃপ্রতিষ্ঠা, পুনঃপুন, পুনর্জীবিত, পুনর্নিয়োগ, পুনর্নির্মাণ, পুনর্মিলন, পুনর্লাভ, পুনর্মুদ্রিত, পুনরুদ্ধার, পুনর্বিচার, পুনর্বিবেচনা, পুনর্গঠন, পুনর্বাসন ইত্যাদি।
৯.আমরা অনেকেই একটা কমন বানান ভুল করে থাকি।দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি ঠিক গ্রস্থ হবে নাকি গ্রস্ত হবে।
এখানে জেনে রাখুন কোন পদের শেষে’-গ্রস্থ’ নয় ‘-গ্রস্ত’ হবে। যেমন— বাধাগ্রস্ত/বাঁধাগ্রস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত, হতাশাগ্রস্ত, বিপদগ্রস্ত ইত্যাদি।
১০. অঞ্জলি দ্বারা গঠিত সকল শব্দে ই-কার হবে কখনো ঈ কার বসাবেন না।কারণ ঈ কার যোগে বানান ভুল। যেমন— পুষ্পাঞ্জলি,জলাঞ্জলি, অঞ্জলি, গীতাঞ্জলি, শ্রদ্ধাঞ্জলি ইত্যাদি।
১১.আমরা অনেকেই জেনেও হরহামেশাই ভুল করে থাকি বিদেশি শব্দে কখনই ণ, ছ, ষ ব্যবহার হবে না। যেমন— হর্ন, কর্নার, স'মিল, স্টারলাইট, আস্সালামু আলাইকুম, ইনসান, বাসস্ট্যান্ড ইত্যাদি।
'
Courtesy : Internet
COMMENTS